(একটি নীরব সাক্ষীর হৃদয়ছোঁয়া কাহিনি)
সময়টা ২০১৫।
গুগল ম্যাপের ক্যামেরা ঘুরে বেড়াচ্ছিল ছোট্ট এক পল্লী গ্রামের শান্ত রাস্তার ধারে। হঠাৎ এক দৃশ্য ধরা পড়ল ক্যামেরায়—
দুই বৃদ্ধ দম্পতি, একসাথে বসে বাড়ির সামনের চাতালে, এক প্লেটে খাবার ভাগ করে খাচ্ছেন।
দেখে মনে হচ্ছিল— জীবনের শত ঝড়ঝাপটা পেরিয়ে এই একটা মুহূর্তে এসে তারা শান্তি খুঁজে পেয়েছেন।
একসাথে থাকা, একসাথে খাওয়া— এতটুকুই তাদের ভালোবাসার ভাষা। 💕
২০১৬।
এক বছর কেটে গেছে।
Google Maps আবার ছবি তোলে।
তাদের আবার দেখা যায়— তবে এবার চেয়ার বদলেছে।
কিন্তু ভালোবাসা বদলায়নি।
তারা চুপচাপ বসে, কিন্তু চোখে চোখে যত্ন আর অভ্যাসের হাজারো কথা বলা হয়ে যায়।
২০১৭।
এই বছর দৃশ্যটা কিছুটা পাল্টে যায়।
শুধু ঠাকুমা বসে আছেন, একা।
দাদু আর নেই সেখানে।
চোখে যেন শূন্যতা, মুখে নীরবতা।
২০১৮।
দাদু বিহীন সেই চাতালে এবার ঠাকুমা আর আগের চেয়ারে বসেন না।
তিনি বসে আছেন অর্ধ-খোলা দরজার সামনে।
মাথা নিচু, গায়ে ক্লান্তির ছাপ।
২০২০।
একদিন হঠাৎ দেখা গেল— ঠাকুমা আবার পুরনো চেয়ারে বসে আছেন।
কিন্তু এবার কোলে একটা বিড়াল,
মনে হয় দাদুর অভাব পূরণ করতে যেন থুতুকু তার নতুন সঙ্গী।
২০২১।
এবছর তার চলাফেরা আর আগের মতো নেই।
পায়ে ভর নেই, চোখে দৃষ্টিও কম।
২০২২।
Google Maps এসে দেখে— দরজাটা বন্ধ।
ঠাকুমার আর দেখা নেই।
হয়তো এবার তার প্রিয় মানুষটির কাছে ফিরে গেছেন।
২০২৩।
বাড়িটি আর আগের মতো নেই।
দরজায় তালা, চারপাশে আগাছা।
চেয়ারটা ঠিকই দাঁড়িয়ে, তবে খালি।
২০২৪।
আবার কেউ আগাছা পরিষ্কার করেছে।
কিন্তু ঘরটা নিশ্চুপ, নীরব।
২০২৫।
এবছর Google Maps আর কিছু খুঁজে পায় না।
বাড়িটাই নেই।
একটা খালি জমি পড়ে আছে— একদম নীরব। তাদের আর কোনও চিহ্ন নেই। শুধু ছবিগুলো রয়ে গেছে, আর রয়ে গেছে একটা ভালোবাসার ইতিহাস— যা কেউ বলে না, শুধু Google Maps বলে, আর আমি বলি।
ভালোবাসা মানেই একসাথে থাকা নয়,
ভালোবাসা মানেই একে অপরকে হৃদয়ে বাঁচিয়ে রাখা।🥀
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন